খুলনা, বাংলাদেশ | ১৬ পৌষ, ১৪৩১ | ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে এক জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১১৪
  দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে : তারেক রহমান
  খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মুন্সি মাহাবুব আলম সোহাগকে কারাগারে প্রেরণ

সুন্দরবনে দুই দিন

গৌরাঙ্গ নন্দী

ভোর ছ’টায় ঘুম ভেঙ্গে যায়। দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছে। দূরে একটি স্থাপনা চোখে পড়ছে। অন্যদিকে, একটি দ্বীপের মতো। কেবিনের বিছানা ছেড়ে শশব্যস্ত হয়ে ডেকে এসে দাঁড়াই। ঠিক, পাশেই দ্বীপ। নাম ডিমের চর। অন্যদিকে কচিখালি বন অফিস। ওই বন অফিসের স্থাপনাই কেবিনের জানালা দিয়ে চোখে পড়েছিল। শিশু-কিশোরসহ বিশ জনেরও অধিক এই দলটির সাতটার সময় ডিমের চরে নামার কথা। বছর চারেক আগেও একবার এই ডিমের চরে এসেছিলাম। ডিম্বাকৃতির বলে এই চরটির নাম হয়েছে ডিমের চর।

ডিমের চর, পাশেই পক্ষীর চর। পাখির মতো দেখতে তাই পক্ষীর চর। একেবারে বঙ্গোপসাগরের মধ্যে সুন্দরবনের কাছে জেগে ওঠা পাশাপাশি দুটো চর। একেবারে চারিদিকে সাগর বেষ্টিত হওয়ায় পক্ষীর চরে ভ্রমণকারীদের সাধারণভাবে যাওয়ার অনুমতি মেলে না। ডিমের চরে ভ্রমণকারীরা যেতে পারে। চরের বালুকাতটে ভ্রমণকারীরা ছুটোছুটি করে। চাইলে সাগর-জলে অবগাহনও করে অনেকে। আগেরবারে আমাদের দলের বারো জন সাগরে গলা ডুবিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলো চিহ্নিত করতে একটি আসর বসিয়েছিল। কেউ কেউ ফুটবল নিয়েও খেলায় মেতেছিল।

অপেক্ষাকৃত ছোট একটি লঞ্চে এবারের ভ্রমণকারীদের মধ্যে প্রথমবার সুন্দরবন এসেছেন অনেকেই। শিশু, কিশোররাও আছে। সেকারণেই আয়োজকরা ডিমের চরে নামার পরিকল্পনা করেছিল। আমি-ত ডেকেই দাঁড়িয়ে আছি। দূরে আবছা আলোর মত সাগরপাড়ের গাছপালাগুলো ঢাকা পড়ে আছে। হঠাৎ একটুখানি আলোর ঝলকানি। আলোর রেখা সাগরজলে পড়ে চিকচিক করতে শুরু করে। কিন্তু হায়! ওই একটু মুহূর্তই। পরক্ষণেই তা মিলিয়ে যায়। আবার অন্ধকার ঘনিয়ে এলো। একেবারে চারিদিকটা আঁধারে ছেয়ে গেছে। ডিসেম্বরের ২৪ তারিখের সকালটায় সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়তে না পড়তেই কুয়াশার চাদরে চারিদিকটা ঢাকা পড়ে যায়। দূরের সেই স্থাপনাটি আর চোখে পড়ে না। আস্তে আস্তে কাছের সাগর-জলটিও অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায়। ডিমের চরের তটরেখাটিও কোথায় যেন মিলিয়ে যায়।

ডিমের চর সুন্দরবনের পূর্ব প্রান্তের ছোট্ট একটি দ্বীপ। এর ডান দিক হতে উঠে গেছে একটি জোয়ারের নদী। নাম বলেশ্বর। এই বলেশ্বর দিয়েই ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হেনেছিল; যার নির্মম শিকার হয়েছিল অনতিদূরের সাউথখালি এলাকার বাসিন্দরা। বলেশ্বরের পূর্বপ্রান্তে হরিণঘাটা। ডিমের চরের উত্তরপ্রান্তে সমুদ্রভাগটি ছাড়িয়ে জামতলা সমূদ্র সৈকত। এই সৈকতেই ২০০৪ সালে ঘটেছিল এক করুণতম ঘটনা। বেড়াতে যাওয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সৈকতে ছুটোছুটি করার সময় ঘটে বিপত্তিটি। হঠাৎ জোয়ারের ধাক্কায় ১১ শিক্ষার্থীকে ভাসিয়ে নেয়। কটকা আর কচিখালিকে দুই ভাগ করেছে একটি জোয়ারের শ্রোত, নদীর চেহারা হলেও তার নাম সুপতি খাল। প্রকৃতপক্ষে, সুপতি খালটি উত্তর দিকে এগিয়ে গিয়ে আবারও বলেশ্বর নদীতে মিশে একটি লম্বাকৃতির দ্বীপ তৈরি করেছে, যার নাম কচিখালি।

কুয়াশার চাদর সরতে সরতে বেলা দশটা। আর নামা হলো না ডিমের চরে। লঞ্চটি চলে এলো কচিখালি বন অফিসের পাড়ে। বন অফিসকে ঘিরেই গড়ে তোলা হয়েছে ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে বন কর্মকর্তাদের থাকবার জন্য স্থাপনা গড়ে উঠছে। ভ্রমণকারীদের জন্য কাঠের ট্রেইল (বনের মধ্যে পায়ে হাঁটা পথ)-এর পরিবর্তে কংক্রিটের ট্রেইল তৈরি হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার নির্মিত হয়েছে। প্রচুর সংখ্যায় ভ্রমণকারী আসছে। ভ্রমণকারীদের নিয়ে আসা লঞ্চগুলোর ঝলমল করা আলো রাতের অন্ধকার ঝেঁটিয়ে বিদেয় করে। লঞ্চ চলার শব্দে বনের নৈ:শব্দ বিলীন হয়। কটকার বানরগুলো মানুষ দেখে দৌড়ে পালায় না; তারা আগতদের উপর কখনও কখনও ঝঁপিয়ে পড়ে, তেমনিভাবে হয়তো রাতে সমুদ্রজলের মধ্যেকার ঝলমলে আলো দেখে দেখে পশুরা অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
অবশ্য, জাহাজের আলোর ছটায় রাতকে একেবারে দিন বানিয়ে ছাড়ে পশুর নদের হাড়বাড়িয়া এলাকা। এখানে মোংলা বন্দরে আসা জাহাজগুলো অপেক্ষা করে। রাতের বেলায় জাহাজের উচ্চমাত্রার আলোগুলো জ্বালানো হয়। উপায়ও নেই, কারণ পশুর নদটি মোংলা বন্দরের প্রধান চ্যানেল। মোংলা বন্দর হতে হিরণ পয়েন্ট পর্যন্ত ৭৬ কিলোমিটারের দীর্ঘ নৌ-পথটি মোংলা বন্দরের প্রধান রুট। সমুদ্র হতে এই নৌ-পথ পাড়ি দিয়েই বন্দরের জেটি। পৃথিবীর একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, সুন্দরবনের মধ্যে দিয়েই এই নৌ-পথ। জাহাজের আলোয় বনের আঁধার মিলিয়ে যায়। জাহাজের ঢেউয়ে পশুরের পাড়ে ভাঙ্গন তীব্রতর হয়। জাহাজের বর্জ্য-তেল-ময়লায় সুন্দরবন সয়লাব হয়।

 

কটকা বীচ বলে পরিচিত জায়গাটি সামুদ্রিক জোয়ারের ধাক্কায় ভাঙছে। পূর্ণিমার জোয়ারে আসা বিপুল সামুদ্রিক জলরাশি বিশাল এলাকা ভাসিয়ে নিচ্ছে। তীরের বড় বড় বাইন গাছগুলো উপড়ে সমুদ্রের জলে মিশে গেছে। আর প্রবল নোনা জলের দাপটে উপরের দিককার বনের গাছগুলো মরছে। বিশাল এলাকা জুড়ে ফাঁকা হয়ে বিশাল মাঠ তৈরি করেছে। যেখানে গাছপালা আছে, সেখানে শব্দহীন অবস্থায় দাঁড়ালে কেওড়ার পাতা খেতে খেতে একটি, দুটি বা একদল হরিণকে আসতে দেখা যায়। হরিণগুলোর খাওয়া শেষ হলে, সূর্যাস্তের পর গোধুলিতে আস্তে আস্তে গুটি গুটি পা ফেলে তারা বন অফিসের সামনের পুকুরে এসে পানি পান করে। পুকুরের অপর প্রান্ত হতে আমারও চোখে পড়ে একটি হরিণ পানি পান করে ধীরে ধীরে পুকুরের পাড়ে উঠছে। একটি নয়, আরও একটি হরিণ! আস্তে আস্তে পুকুরের ঢাল বেয়ে পানি পানের জন্যে এগুচ্ছে। সামনের পা দুটো একেবারে পানির কাছে নিয়ে মুখটা বাড়িয়ে দেয় হরিণটি। কী অদ্ভুত! পিছনের পা দুটো একেবারে পুকুরের ঢালে। হরিণটির গোটা শরীরটি ধনুকের মতো বেঁকে আছে। কী অপরূপ!

কচিখালি থেকে কটকা যাওয়ার পথে নদীর পাড়ের গোলপাতাগুলো বিবর্ণ। কেমন যেন পোড়া, পোড়া। উঁচু, লম্বাটে গাছ তেমন চোখে পড়ে না। ভাটা হচ্ছে। নদীতীরের বেশ খানিকটা এলাকার পানি সরে গেছে। সর-কাদার আস্তরণে ঝিরিঝিরি আলোর ঝলকানি। হৈ চৈ করে উঠল লঞ্চের কিশোর পর্যটকরা। দেখা গেল, বিশালাকৃতির একটি কুমির সেই সর-কাদা-মাটিতে শুয়ে শীতের রোদে স্নান করছে। হাত পঞ্চাশেক দূর হতে যাওয়া পর্যটকবাহী লঞ্চ-যাত্রীদের হৈ হৈ শব্দ কুমিরটিকে কোন ধরণের নাড়া দিতে পেরেছে বলে মনে হল না। মাঝে মাঝে সাদা বক উড়ছে। কখনও কখনও সাদা বক নদী-তীরে খাবার খুঁজে চলেছে। একটি পাখি লঞ্চটিকে কেন্দ্র করে কয়েক দফা চক্কর দিয়ে বনের দিকে ছুট দেয়। নদীর তীরে খাবার খুঁজতে বানরের দলও আসে। কটকার পাড়ে ত এক সারিতে বিশের অধিক বানরকে খাবার খুঁজতে দেখা গেল।

২৫ ডিসেম্বর সকালেও কুয়াশার আনাগোণা। আন্ধারমানিক ফরেস্ট অফিসের কাছে নদীর ত্রিমোহনায় ভোর রাতে লঞ্চ থেমেছে। রাতের বেলায় শব্দের ঢেউ তুলে বনের নিস্তবদ্ধতা সরিয়ে লঞ্চ এসে থেমেছে। সকাল সাড়ে আটটার দিকে চারিদিকটা একটু পরিস্কার হয়। সূয্যি মামাকে তখনও ঠিক পাওয়া যায়নি। আবার আগের রাতে শিশিরের মত ফোটায় ফোটায় বৃষ্টি হয়েছে। ভোর ছয়টা হতে সাড়ে আটটা অবধিও তিন দফায় বৃষ্টির ফোঁটা দেখা গেছে। যার স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র কয়েক মিনিট।

সকলেই বনের মধ্যেকার কংক্রিটের হাঁটাপথে হাঁটতে হাঁটতে সুন্দরী গাছ আর তার শুলো (শ্বাসমূল) দেখি। হঠাৎ একটু দূরে গাছের ডালপালা নড়ে ওঠে। কেউ একজন ‘বাঘ না-কি’ বলে আতঙ্কে চিৎকার করে ওঠে। ট্রেইলের উপরে সকলে দাঁড়িয়ে যায়। ভালো করে নিরীক্ষণ করে দেখা গেল, একাধিক বানর লুকোচুরি খেলছে। হতে পারে মানুষ দেখে বেজায় বিরক্ত। একটি ত ছুট দিয়ে এক গাছ থেকে আর এক গাছে গিয়েই পাতার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে নিলো। ইকো-ট্যুরিজমের নামে এখানেও হরিণ আটকে রাখা হয়েছে। বনের মধ্যেই পশু আটকে রাখা। অবশ্য, শিশু ও কিশোর পর্যটকরা এতে আনন্দই পায়। অনেকেই ঘাস তুলে হরিণকে ডাকতে থাকে। কখনও কখনও হরিণ আসেও। এতেই শিশুর মুখে অনাবিল হাসি ওঠে। আমাদের দলের সাত বছরের কণ্যা শিশু মায়া-ত বলেই উঠলো, ওই হরিণটি আমার ডাকে কাছে আসে, আমার সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয়েছে।

সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ অর্থাৎ ছয় হাজার বর্গমাইলেরও কিছু বেশী এলাকা জুড়ে এরকম বারোটি ট্যরিস্ট স্পট রয়েছে। এগুলো হচ্ছে আলিবান্দা, আন্ধারমানিক, দোবেকি, দুবলার চর, হাড়বাড়িয়া, হিরণ পয়েন্ট, কালাবগি, কলাগাছিয়া, করমজল, কটকা, কচিখালি ও শেখের টেক। সাধারণত: ট্যুরিস্ট লঞ্চগুলো মোংলা থেকে ছেড়ে পশুর- শেলা নদী হয়ে কচিখালি-কটকা যায়। সেখান থেকে দুবলার চর, হিরণ পয়েন্টেও কেউ কেউ যায়। আবার কেউ কেউ আন্ধারমানিক, হাড়বাড়িয়া, করমজল হয়ে ফেরে। প্রকৃপক্ষে, কটকা-কচিখালি-আন্ধারমানিক রুটটি জনপ্রিয় রুট। এটি পড়েছে প্রশাসনিকভাবে সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগ এবং জেলা হিসেবে বাগেরহাটের আওতাধীন।

মোংলা বন্দরের জেটি এলাকা হতে পশুর নদ অনেকটা সোজা গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এই পশুর নদটি বলা চলে, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশটিকে দুই ভাগে ভাগ করেছে। পশুর নদটিও বেশ বড়। বনের বাংলাদেশ সীমান্তে আড়পাঙাশিয়া নদী। এর পশ্চিম অংশে সুন্দরবনটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যে পড়েছে। এর আয়তন চার হাজার বর্গকিলোমিটারের মত। এটি সে দেশের জাতীয় পার্ক। আমাদের সুন্দরবনটি জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য। সুন্দরবনের নির্দিষ্ট কিছু অংশ অভয়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত। কিছু এলাকায় আছে ডলফিনের বিচরণ ভূমি, আছে কুমিরের বিচরণ এলাকা। অভয়ারণ্যে মাছ ধরা নিষেধ। প্রকৃতপক্ষে, সুন্দরবনের মধ্যে হতে এখন মাছ ধরা, মধু আহরণ করা এবং গোলপাতা সংগ্রহ করা ছাড়া অন্য কিছু আহরণের সুযোগ নেই। কোন ধরনের গাছ সংগ্রহের অনুমতি নেই অনেকদিন থেকেই। ম্যানগ্রোভ এই বনের ধুন্দল গাছটির কাঠ আসবাবপত্র তৈরির জন্য গুণে ও মানে সেরা ছিল। অনিয়ন্ত্রিত আহরণের ফলে এই গাছটি আর এখন দেখা যায় না বললেই চলে।

প্রকৃতপক্ষে, সুন্দরবন একটি জলাভূমি। নোনা ও মিষ্টি জলের সংমিশ্রণস্থলে এটি গড়ে উঠেছে। তবে বর্তমানে নোনার পরিমাণ বাড়ছে। এক সময়ে বলা হতো সুন্দরবনেই নদীর সংখ্যা তিন শতাধিক, খাল-নালা-ভারানির সংখ্যা অনেক। তবে সাগর থেকে উঠে আসা জোয়ারের এই নদীগুলোর বিপুল পরিমাণে পলি অবক্ষেপিত হয়ে খাল-নালা শুকিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে খালে ছোট নৌকা চলে। তবে ভাটার সময় সতর্ক থাকতে হয়। ভাটার সময় অনেক খালেই পানি একেবারে থাকে না। শেলা নদী সংলগ্ন খালের মধ্যে লঞ্চে থাকা ইঞ্জিন বোটে করে আমরা খালের মধ্যে যাই। কিলোমিটার তিনেক ভিতরে যাওয়ার পর নৌকা চালক ফিরে আসার উদ্যোগ নিলে আমাদের মন খারাপ হয়। তিনি খালের পানির স্তর দেখিয়ে বলেন, আর এগুলে নৌকা আটকা পড়ে যেতে পারে। আর আটকে গেলে আমাদের ফিরে যাওয়ার কোন উপায় থাকবে না; অপেক্ষা করতে হবে জোয়ার আসা পর্যন্ত। বড় নদ পশুরেরও করুণ দশা। বিপুল পরিমাণে পলি জমছে নদী-গর্ভে। হিরণ পয়েন্টের কাছে-ত ভাটার সময় সাধারণ নৌকাও আটকে যায়। আর পুরো নদীপথেই জাহাজ চলাচলের সুবিধার জন্য গভীরতা সম্পর্কিত সতর্ক-সংকেত দেওয়া।

করমজল স্পটটি একেবারে সুন্দরবনের উত্তরে, মোংলার কাছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ সারাবছর মোংলায় নেমেই ছোট নৌকা নিয়ে চলে আসে। সবসময় ভীড় লেগেই থাকে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্যে এখানেও ওয়াচ টাওয়ার, ফুট ট্রেইল ছাড়াও নির্দিষ্ট এলাকায় হরিণ আটকে রাখা ও কুমির প্রজনন কেন্দ্র রয়েছে। আছে মাটিতে খোদাই করা সুন্দরবনের মানচিত্র। বানর আছে আটকা। খাবার দিলে কাছে আসে। আবার সুযোগ বুঝে পর্যটকদের হাতে থাকা ব্যাগে থাবাও দেয়।

জলাভূমিতে সবুজের সমারোহ আর পশু-পাখির বিচরণস্থলটি বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবিকার উৎসস্থলও। নৈসর্গিক টানে মানুষ এখানে আসে। তবে ছোট-বড় লঞ্চ-জাহাজের শব্দে বনের নৈ:শব্দ্য ধুলোয় লুটোপুটি খায়। প্রকৃতির টানে এসে প্রকৃতিকে বিরক্ত করেই মানুষ আনন্দ খুঁজে পায়। আধুনিক এই যুগে হয়তো এর কোন বিকল্পও নেই।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!